অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ৩৫ তম প্রতিষ্ঠা-বার্ষিকীর বিশাল জনসমাবেশে দখলদার ইসরাইলের প্রতি প্রকাশ্য সংঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
গাজায় গত বুধবারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে হামাসের নেতা ইয়াহিয়া আস সিনওয়ার বলেছেন, মুসলমানদের প্রথম কিবলার মসজিদ আলআকসার প্রাঙ্গণ তালুতি, ফ্যাসিবাদী, ইহুদিবাদী ও উগ্র ডানপন্থী ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর হাতে দখলের হুমকির মধ্যে রয়েছে, কিন্তু হামাস জোরালোভাবে এর জবাব দেবে।
হামাস সমর্থকদের সবুজ পতাকার জনসমুদ্র ও হামাসের সামরিক শাখার সদস্যদের প্যারেডের সামনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা অশেষ রকেট ও সেনা নিয়ে তোমাদের কাছে আসব।
নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরাইলি শাসকদের নতুন কোয়ালিশন একটি ধর্মীয় যুদ্ধ সৃষ্টি করতে চায় বলেও সিনওয়ার মন্তব্য করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি দখলদারদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি জনগণের যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে তার নজির গত এক দশকেরও বেশি সময়ে দেখা যায়নি।
হামাস ২০০৬ সালের নির্বাচনে ফাতাহ বা পিএলওকে পরাজিত করে। আর সেই থেকে ফিলিস্তিনের কথিত স্ব-শাসন অঞ্চলে শাসনের অধিকার লাভ করলেও কেবল গাজায় শাসন-ক্ষমতা ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে হামাস যদিও গাজার ওপর মিশর ছাড়াও ইসরাইল ও তার মদদদাতাদের সর্বাত্মক অবরোধও সেই বছর থেকে এখনও বজায় রয়েছে। তাই হামাসকে যুদ্ধ ছাড়াও পুনর্গঠনের কথাও ভাবতে হয়। গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির প্রায় ৫০ শতাংশই বেকারত্ব ও দারিদ্রের শিকার। এ কারণেই হামাস ইসলামী জিহাদের সঙ্গে ইসরাইলের সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময় এই গ্রুপের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানালেও গ্রুপটির পক্ষ নিয়ে সরাসরি সরাসরি সশস্ত্র যুদ্ধে নামেনি।
হামাসের সামরিক শাখার যোদ্ধাদের প্যারেড
পশ্চিম তীরে ইসরাইলি আগ্রাসন জোরদার হওয়া সত্ত্বেও প্রায় এক বছর ধরে ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাত থেকে হামাসের দুরে থাকার দিকে ইঙ্গিত করে হামাস প্রধান সিনওয়ার বলেছেন, আমাদের নীরবতা হচ্ছে প্রস্তুতি এবং আমরা যদি কথা বলি তবে বন্দুকই আমাদের পক্ষে কথা বলবে। তিনি সিংহদের গুহা নামক নতুন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গ্রুপের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের প্রশংসা করে তাদের প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা কেবল নাবলুসে নয় তারা গোটা জাতির সবখানেই রয়েছেন।
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল কাস্সাম ব্রিগেডের প্রধান মুহাম্মাদ আদ দাইফ ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার সংগ্রামে সব ফিলিস্তিনি দল ও গ্রুপকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ফিলিস্তিন থেকে ইসরাইলি দখলদাররা বিতাড়িত হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ওদিকে হামাস তার ৩৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের ন্যায্য অধিকারের বিষয়ে সুবিচার করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো এবং আলকুদসকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকেও ফিলিস্তিনিদের অধিকার বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রতিরোধ আন্দোলন অধিকৃত ফিলিস্তিনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজের দ্বিমুখী আচরণের অবসান ঘটানোর এবং ফিলিস্তিনি জাতির অধিকারের মোকাবেলায় তেলআবিবের শাসকগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন বন্ধ করারও দাবি জানিয়েছে।
Leave a Reply